যেকোনো পোশাক দোকানদার নিজে বা দোকানে নিযুক্ত কয়েকজন একসাথে তৈরি করে থাকে। আজকাল শহরের মত গ্রামেও বিশেষত জেলা শহরগুলোতে প্রচুর দর্জির দোকান দেখা যায়। এসব দোকানে পুরুষদের পাশাপাশি মহিলারাও কাজ করে থাকে। বর্তমানে একে অনেকেই ব্যবসা হিসেবে গ্রহণ করে বাড়তি আয় করছে। নানা ধরনের পোশাক তৈরি করে বাজারে বিক্রির মাধ্যমে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়া যায়। আবার পোশাক তৈরির কারখানাতে কাজ করে বা শুধু একটি সেলাই মেশিন কিনে অর্ডার হিসেবে কাজ করেও আয় করা যায়। সাধারণভাবে পোশাক বলতে সেইসব কাপড়কে বুঝায় যা আমরা পরিধান করে থাকি। আমরা মূলত যেসব পোশাক পরি তার বেশিরভাগই হাত দিয়ে বা সেলাই মেশিন দিয়ে সেলাই করা হয়। যেকোনো পোশাকই সুন্দর দেখায় যদি তাতে সুন্দর সুন্দর নকশা থাকে। মহিলা ও পুরুষের পোশাকের ধরণ বুঝে দেহের মাপ নিয়ে পছন্দমত ডিজাইন অনুযায়ী পোশাক তৈরি করা হয়। কিভাবে নানা ধরনের পোশাক যেমন- সালোয়ার কামিজ, শার্ট ইত্যাদি তৈরি করতে হয় সেই বিষয়ে জানা প্রয়োজন।
পোশাক কিভাবে তৈরি করতে হবে তা নিচে আলোচনা করা হলঃ
পোশাকের নাম
বাচ্চাদের পরার জামা
মেয়েদের পরার কামিজ
মেয়েদের পরার সালোয়ার
১. বাচ্চাদের পরার জামা
জণ্মের পর থেকে ৫ বছর বয়স পর্যন্ত শিশুরা যে পোশাক ব্যবহার করে তাকে জামা বলে। জামা নানা ধরনের নকশা করে বানানো যায়। যেমন-গলায় বা ঝুলে কুচি দিয়ে অথবা কুচি ছাড়া। জামা সাধারণত পাতলা কাপড় দিয়ে বানানো হয় যা দুই হাত থেকে আড়াই হাত বহরের হয়। এখন আমরা জানব ২ বছর বয়সের একটি শিশু পরতে পারবে এমন একটি কুচি ছাড়া জামা কিভাবে তৈরি করতে হবে:
প্রথমে বলা যাক দুই বছর বয়সী শিশুর জামার আনুমানিক সাইজ কেমন হবে। এক্ষেত্রে-
জামার ঝুলের মাপ হবে ১৬ ইঞ্চি
জামার বুকের মাপ হবে ২০ ইঞ্চি
জামার কাঁধের মাপ হবে ঌ ইঞ্চি
জামার গলার লম্বার মাপ হবে ২১/২ ইঞ্চি
জামার গলার চওড়ার মাপ হবে ২ ইঞ্চি
কিভাবে জামার জন্য নির্ধারিত কাপড়টি কাটতে হবে নিয়মগুলো হলঃ
জামা বানানোর জন্য প্রথমে ২ হাত বহরের (আনুমানিক/মনে করি) আধা গজ কাপড় নিতে হবে।
এই কাপড়টি আড়াআড়িভাবে ৪ ভাঁজ করতে হবে।
১৬ ইঞ্চি ঝুল রাখার জন্য কাপড়টি লম্বায় ১৭ ইঞ্চি ও চওড়ায় ৮ ইঞ্চি মেপে দাগ দিতে হবে। মনে রাখতে হবে, অতিরিক্ত ১ ইঞ্চি কাপড় লাগবে ঝুল মুড়ে সেলাই করার জন্য।
এবার কাপড়ের যেদিকে ভাঁজের লাইন আছে সেদিক থেকে গলা কাঁটার জন্য আড়াই ইঞ্চি ও আওড়ার জন্য দুই ইঞ্চি মাপ নিতে হবে। এটা হল গলার আদর্শ মাপ। প্রয়োজন বা পছন্দমত গলা আরও বড় করা যাবে।
এবার এই মাপমত গলার লম্বা ও চওড়ার দিকে দাগ টেনে দিতে হবে।
এরপর গলার লম্বা ও চওড়ার দাগ যেখানে মিলেছে ঠিক সেখান থেকে ভিতরের দিকে আধা ইঞ্চি মেপে একটি দাগ দিতে হবে। তারপর এই দাগের উপর দিয়ে নিমার পিছনের গলার মাপ দিতে হবে।
জামার পিছনের গলার থেকে সামনের গলা কমপক্ষে আধা ইঞ্চি বেশি কাটতে হয়। এজন্য পিছনের গলার মত সামনের গলা একইভাবে আরও আধা ইঞ্চি বেশি মেপে বাঁকাভাবে দাগ দিতে হবে।
এরপর (যেদিক থেকে গলার মাপ নেয়া হয়েছে সেদিক থেকে) গলার দিক থেকে কাপড়ের চওড়ার দিকে সাড়ে চার ইঞ্চি মেপে দাগ দিতে হবে। এটা হল কাঁধলাইনের মাপ।
কাঁধলাইনের শেষ মাথা থেকে নিচের দিকে আধা ইঞ্চি মেপে দাগ দিয়ে এই দাগের সাথে গলার দাগ যোগ করে একটি লাইন টানতে হবে।
আবার কাঁধলাইনের উপর দিক থেকে নিচের দিকে ৫ ইঞ্চি (নিমার কাঁধ ঌ ইঞ্চি, ঌ ইঞ্চির অর্ধেক সাড়ে চার ইঞ্চি আর সেলাইয়ের জন্য আধা ইঞ্চি বেশি নিতে হবে) মেপে দাগ দিতে হবে।
কাপড়ের ভাঁজলাইন থেকে চওড়ার দিকে বুকলাইনের জন্য সাড়ে ছয় ইঞ্চি মেপে দাগ দিতে হবে। কারণ এই নিমার বুকের চওড়ার মাপ হল ২০ ইঞ্চি, ঢিলার মাপ চার ইঞ্চি, আর দুই পাশের সেলাইয়ের জন্য কাপড় বেশি লাগবে ২ ইঞ্চি। তাহলে মোট ২৬ ইঞ্চি কাপড় কাটতে হবে। এখানে কাপড়টি চার ভাঁজ করা হয়েছে। এই নিমার বুক ২০ ইঞ্চি যার ৪ ভাগের ১ ভাগ হল ( ৫ ইঞ্চি + ঢিলা ১ ইঞ্চি + সেলাই ১/২ ইঞ্চি) = ৬১/২ ইঞ্চি।
তারপর এই দাগ দুটি যেখানে মিলেছে তার উপরের দিকে ১ ইঞ্চি মেপে একটি দাগ দিতে হবে। এবার এই দাগের উপর দিয়ে নিমার পিছনের বগলের ঘের হিসেবে দাগ দিতে হবে। একইভাবে নিমার সামনের বগলের জন্য প্রথম বাঁকা দাগের পিছনের দিকে আধা ইঞ্চি বেশি নিয়ে বাঁকা করে দাগ দিতে হবে।
আবার বগলের ঘেরের শেষ মাথা থেকে ঝুল পর্যন্ত দাগ দিতে হবে।
এরপর নিমার ঝুলের ২ কোণার সেপের জন্য ঝুলের দিক থেকে উপরের দিকে ১ ইঞ্চি মেপে দাগ দিতে হবে।
এরপর ঐ দাগ থেকে নিমার ঝুলের মাঝখান পর্যন্ত বাঁকা করে দাগ দিতে হবে।
এরপর পিছনের গলার অংশটুকু বাঁকা করে কাটতে হবে।
তারপর কাঁধে লাইন কাটি। সেইসাথে পিছনের বগলের ঘেরের অংশটুকুও বাঁকা করে কাটতে হবে।
এবার জামার পাশের ঘেরের অংশটুকু কাটতে হবে। তারপর ঝুলের নিচের দাগ দেওয়া অংশটুকু কাটতে হবে।
এবার উপর থেকে দাগ দেওয়া কাপড়ের টুকরাটি নিয়ে নিতে হবে। একইভাবে সামনের অংশের গলা ও বগলও কেটে ফেলতে হবে।
Tuesday 13 February 2018
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment